Bangla Awas Yojana: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার জানিয়ে দিলেন, কেন্দ্র টাকা না দিলেও রাজ্য সরকার নিজেদের উদ্যোগে
আগামী বছর মে-জুন মাসের মধ্যে আরও ৮ লক্ষ এবং ডিসেম্বর বা ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে আরও ৮ লক্ষ উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির জন্য অর্থ প্রদান করবে।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, যদি কেন্দ্র শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের টাকা বরাদ্দ না-ই করে, তবে রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকেই এই অর্থের সংস্থান করবে।
১২ লক্ষ উপভোক্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ (Bangla Awas Yojana) :-
মুখ্যমন্ত্রী ‘আবাস’ প্রকল্পের আওতায় ১১ লক্ষ উপভোক্তা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আরও ১ লক্ষ উপভোক্তাকে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা করে অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেছেন।
সংশ্লিষ্টদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এই টাকা পৌঁছে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। পরবর্তীতে, দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হবে।
আবাস প্রকল্পের খরচ এবং তালিকা যাচাই
মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই প্রকল্পের জন্য সরকারের মোট খরচ হবে ১৪ হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা। প্রত্যেক উপভোক্তা মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাবেন, দুর্গম অঞ্চলের বাসিন্দারা ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত পাবেন।
রাজ্যের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই ২৮ লক্ষ যোগ্য উপভোক্তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ১২ লক্ষ জনকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে।
মমতার দাবি, তালিকা তৈরির সময় জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিক এবং জনসাধারণের মতামত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাড়ির টাকা পাবার আবেদন ফর্ম জমা শুরু, এক্ষুনি ডাউনলোড করুন | Banglar Bari Application Form
বিরোধীদের অভিযোগ
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বিরোধী শিবির থেকে তীব্র প্রতিবাদ উঠে এসেছে। রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, “আবাস প্রকল্পে ৫০ লক্ষ মানুষের উপর সমীক্ষা চালিয়ে, মাত্র কিছু মানুষকে টাকা দিয়ে বাকিদের গাজর ঝুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এটাই মূলত ভোটের রাজনীতি। প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নিয়ে, সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে।”
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী আরও প্রশ্ন তুলেছেন, “রাজ্য যদি প্রকল্পে স্বচ্ছতা দেখাতে চায়, তবে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে তালিকার বিবরণ দেওয়া হচ্ছে না কেন? প্রকল্পের টাকা তো সাধারণ মানুষের করের টাকা। তাহলে কেন এই লুকোচুরি?”
মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা দাবি
বিরোধীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “গত তিন বছরে কেন্দ্র ৬৯টি অনুসন্ধান দল পাঠিয়েছে।
আমরা সমস্ত তথ্য সরবরাহ করেছি। তার পরেও টাকা দেয়নি কেন্দ্র। অথচ রাজ্য সরকার কথা দিলে কথা রাখে। একশো দিনের কাজের টাকাও বন্ধ করেছে কেন্দ্র।
তার বিকল্প হিসেবে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই ৫৯ লক্ষ মানুষকে ২৭০০ কোটি টাকা দিয়েছে। আবাস প্রকল্পেও আমরা দেশের মধ্যে প্রথম।
তবুও কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ায় রাজ্য নিজস্ব তহবিল থেকেই প্রকল্প এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, যাঁরা এখনও টাকা পাননি, তাঁদের দুঃখ পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ২০২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যেই বাকি ১৬ লক্ষ উপভোক্তাকে দু’টি কিস্তিতে টাকা দিয়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে রাজ্য সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উপভোক্তাদের হাতে প্রতীকী অনুমোদনপত্র
এ দিন নবান্ন সভাঘরে রাজ্যের ২১টি জেলা থেকে আসা ৪৩ জন উপভোক্তাকে মুখ্যমন্ত্রী নিজে হাতে প্রতীকী অনুমোদনপত্র তুলে দেন। এভাবেই প্রকল্পের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতে চাইছে রাজ্য সরকার।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছে, এই ঘোষণা মূলত ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটকে কেন্দ্র করে নেওয়া এক কৌশল।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, কেন্দ্র টাকা না-দিলেও রাজ্য সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে এবং সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত হতে দেবে না।
বাংলার বাড়ি নতুন আবেদন কিভাবে করবেন:-
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরবর্তী ধাপে আরো ১৬ লক্ষ নতুন বাড়ি টাকা দেবে।
আপনারা বর্তমানে নতুন আবেদন করলে পরবর্তী সময়ে যখন টাকা দেবে সেই সময় টাকা পেয়ে যেতে পারবেন । নতুন বাড়ি পাবার আবেদন করার দুটি পদ্ধতি রয়েছে
১) প্রথম পদ্ধতি হলো আপনারা আপনাদের এলাকার বিডিও অফিসে গিয়ে সাদা কাগজে দরখাস্তের মাধ্যমে আবেদন জানাতে পারেন ।
২) দ্বিতীয় পদ্ধতি হলো সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নাম্বারে কল করে বাড়ি পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হেল্পলাইন নাম্বার হল ৯১৩৭০৯১৩৭০
আরও পড়ুন: বাংলা আবাস যোজনার বাড়ির লিস্ট দেখুন | Bangla Awas Yojana List 2024
আরও পড়ুন: বাংলা আবাস যোজনার ফাইনাল লিস্ট ডাউনলোড করুন
টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
হোয়াটস্যাপ চ্যানেল | জয়েন করুন |