Lakhir Bhandar Latest News: ২০২৫ সালের পশ্চিমবঙ্গ বাজেট নিয়ে জল্পনা ছিল অনেক। নির্বাচনের ঠিক আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি জনপ্রিয় প্রকল্প ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকা বাড়াবেন?
মহিলাদের আর্থিক সহায়তা আরও বেশি করে ভোটারদের মন জয় করার কৌশল নেবেন? বিরোধীরাও এমন সম্ভাবনার কথা বলছিলেন।
Lakhir Bhandar Latest News
শুভেন্দু অধিকারী তো সরাসরি বলেছিলেন— রাজ্য সরকার ১৫০০ টাকা করবে, আর বিজেপি ক্ষমতায় এলে ৩০০০ টাকা দেবে! কিন্তু বাজেট ঘোষণার পর দেখা গেল, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর বরাদ্দ একটুও বাড়েনি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরং সম্পূর্ণ অন্য পথে হেঁটেছেন। জনমোহিনী প্রকল্পের জায়গায় এবার তিনি সংস্কার ও সামাজিক পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছেন।
সরকারি প্রকল্প থেকে সরাসরি নগদ সাহায্যের আশায় যারা ছিলেন, তাদের হয়তো কিছুটা হতাশ করেছে এই বাজেট। কিন্তু মমতা সম্ভবত বুঝিয়ে দিলেন, তিনি শুধুমাত্র ‘নগদ সাহায্যের রাজনীতি’তে ভরসা করতে রাজি নন।
আরও পড়ুন:- মাসে ২১০০ টাকা ভাতা দিবে! মোদী সরকারের নতুন প্রকল্প চালু
‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’—একটা রাজনৈতিক মোড় ঘোরানো প্রকল্প
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই প্রকল্প চালু করেছিলেন মমতা। রাজ্যের সাধারণ মহিলারা মাসে ১০০০ টাকা এবং তফসিলি জাতি-উপজাতির মহিলারা ১২০০ টাকা পান।
বলা যায়, এটি ছিল সেই নির্বাচনের অন্যতম প্রধান ‘মাস্টারস্ট্রোক’। এই প্রকল্পই রাজ্যের মহিলাদের একটা বড় অংশের ভোট শাসক দলের দিকে টেনে এনেছিল।
সেই কারণেই ২০২৫-এর বাজেট ঘোষণার আগে অনেকেই ভাবছিলেন, এবার হয়তো মমতা এই টাকার পরিমাণ আরও বাড়াবেন। বিরোধীরাও এই হিসাব করেই নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, সরকার সেই পথে হাঁটল না।
বিরোধীরা কী বলছে?
শুভেন্দু অধিকারী আগেই দাবি করেছিলেন— ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর টাকা ১৫০০ হবে। তার চেয়েও বড় ঘোষণা ছিল বিজেপির— তারা ক্ষমতায় এলে ৩০০০ টাকা দেবে!
কিন্তু বাজেটে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর বরাদ্দ অপরিবর্তিত থাকায়, বিরোধীরা সরব হয়েছে। তাদের মতে, এটা সরকারের অক্ষমতা এবং ভোটের আগেই তৃণমূলের জনপ্রিয়তা কমার লক্ষণ।
কিন্তু শাসক দলের ব্যাখ্যা আলাদা। তাদের মতে, নগদ অর্থসাহায্যের পরিবর্তে এবার রাজ্যের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন এবং সামাজিক পরিকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া হয়েছে।
‘ফ্রি’-র রাজনীতি নিয়ে প্রশ্ন
শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, গোটা দেশে এখন বিনামূল্যে নগদ সাহায্যের রাজনীতি তুঙ্গে। দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের সময়ও দেখা গেছে— আম আদমি পার্টি ২১০০ টাকা এবং বিজেপি ২৫০০ টাকা মহিলাদের দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সুপ্রিম কোর্টও এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছে— এভাবে কি ‘পরজীবী শ্রেণি’ তৈরি হচ্ছে না? সরকার কি মানুষকে স্বাবলম্বী করার বদলে তাদের এক নির্ভরশীল ব্যবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্ভবত সেই larger picture দেখেই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’-এর বরাদ্দ না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভোটবাক্সে এর প্রভাব পড়বে?
এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। রাজ্যের বহু মহিলার কাছে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভরসা। মূল্যবৃদ্ধির এই সময়ে, অনেকেই আশা করেছিলেন যে, সরকার হয়তো আরও কিছুটা বাড়াবে। কিন্তু সেটা হয়নি।
তবে তৃণমূলও নিশ্চয়ই এ নিয়ে নিজেদের রাজনৈতিক হিসাব কষেছে। হয়তো তারা মনে করছে, এই একটা প্রকল্পের চেয়েও বড় অর্থনৈতিক উন্নয়ন বা সামাজিক প্রকল্প মানুষকে বেশি আকর্ষণ করবে।
তবে বিজেপি ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে— তারা ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্পের টাকা তিনগুণ বাড়িয়ে দেবে। ফলে আগামী দিনে এই ইস্যু আরও বড় হয়ে উঠতে পারে।
২০২১ সালের মতোই ২০২৬ সালের নির্বাচনেও ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ বড় ভূমিকা নেবে? এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে।
তবে আপাতত এটা স্পষ্ট, মমতা শুধু ‘ফ্রি-সাবসিডির রাজনীতি’ নয়, দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নেও নজর দিতে চাইছেন। তবে তার এই বাজেট ভোটারদের মন জয় করতে পারবে কি না, সেটাই দেখার।
উপসংহার:-
এতদিন লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বাড়বে বলে যে জল্পনা ছিল সেই জল্পনার অবসান ঘটলো।
ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে বাজেট পেশ হয়ে গিয়েছে সেই বাজেটে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বাড়ানো হয়নি।
অর্থাৎ আগে যেমন ছিল এসসি, এসটিরা মাসে ১২০০ টাকা পাবেন আর ওবিসি, জেনারেল কাস্টের মহিলারা মাসে ১০০০ টাকায় পাবেন। কোন টাকা এবারের বাজেটে বাড়ানো হল না
আরও পড়ুন:- মাসে ৯২৫০ টাকা পাবেন, নতুন প্রকল্প চালু সরকারের
আরও পড়ুন:- ব্যাংকের নতুন নিয়ম চালু, সবাই পাবে ১০০০০ টাকা!
সমস্ত খবরের আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে আপনারা যুক্ত হয়ে যান নিচের লিংকে ক্লিক করে
টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
হোয়াটস্যাপ চ্যানেল | জয়েন করুন |