Paddy Procurement Wb: রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো হুগলিতেও চলতি খরিফ মরসুমে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের জন্য শনিবার থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কাজ শুরু হয়েছে।
তবে, এখনও আমন ধান পুরোপুরি না ওঠায় প্রথম দিন কৃষকদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’, নিম্নচাপ, এবং বন্যার কারণে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় এই আমন চাষ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর ফলে এক কুইন্টাল ধান থেকে কতটুকু চাল পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন চালকল মালিক ও চাষিরা উভয়ই।
জেলা খাদ্য দফতরের মতে, এই মরসুমে সহায়ক মূল্য কুইন্টাল প্রতি ১১৭ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২,৩০০ টাকা। এছাড়াও, সরকারি ক্রয় কেন্দ্রে (সিপিসি) ধান বিক্রি করলে চাষিরা আরও ২০ টাকা উৎসাহ-ভাতা হিসেবে পাবেন, যা কুইন্টাল প্রতি ২,৩২০ টাকা দাঁড়াবে। জেলা প্রশাসন এবারে হুগলির জন্য ৭.৫ লক্ষ টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে।
চাষিদের উদ্বেগ: ফসলের গুণমানের কারণে মূল্য কাটা হতে পারে
হুগলির চাষিদের মধ্যে ফসলের গুণমানের অজুহাতে মূল্য কাটা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। তাঁরা আশঙ্কা করছেন, চালকলগুলি ফসলের মান ঠিক নেই বলে কুইন্টালপ্রতি অনেকটা অংশ বাদ দিতে চাইতে পারে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘বাটা’ বলা হয়।
চালকল মালিকরাও এ বিষয়ে চিন্তিত, কারণ দুর্যোগের কারণে অনেক ক্ষেত্রেই ধানের গুণমান কমে গেছে। সেক্ষেত্রে এক কুইন্টাল ধান থেকে চাল উৎপাদনের অনুপাতও কম হবে বলে তাঁদের আশঙ্কা।
আরও পড়ুন: সবাই পাবে বাড়ি তৈরির টাকা, নতুন নিয়ম চালু | Bangla Awas Yojana
আর এই কারণে চালকলগুলি মূল্য কমাতে গেলে পরিস্থিতি জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
জেলা খাদ্য দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি বিবেচনা করে ধান বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এবার ৬০টি সিপিসি বা কেন্দ্রীভূত ক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে চাষিরা ধান নিয়ে এলে তা নেওয়া হবে। প্রথম দিনে আউস বা পুরনো ধান মাত্র ২৯ কুইন্টাল ৩০ কেজি কেনা হয়েছে।
স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ই-পস যন্ত্র ব্যবহৃত হবে
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, সিপিসি ছাড়াও সমবায় সমিতি, স্বনির্ভর গোষ্ঠী এবং এফপিও (ফারমার্স প্রোডিউসার অর্গানাইজেশন)-এর মাধ্যমে ধান কেনা হবে।
এছাড়া ওজনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সর্বত্র ইলেকট্রনিক পরিমাপ যন্ত্র এবং নয়া প্রযুক্তির ই-পস (ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেলস) যন্ত্র ব্যবহার করা হবে।
এই মরসুমে হুগলিতে সরকারের কাছ থেকে কেনা ধানের প্রক্রিয়াকরণের জন্য এ পর্যন্ত ৭৩টি চালকল চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। জেলা চালকল মালিক সমিতির এক কর্মকর্তা সুনীলকুমার ঘোষ জানান, এখনও আমন ধান পুরোপুরি তোলা হয়নি। হয়তো কিছু আউস ধান প্রথমে ক্রয় কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছাবে।
সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি চাষিদের
পুরশুড়ার কেলেপাড়ার চাষি বাপ্পাদিত্য ধোলে, গোঘাটের বালি গ্রামের বিদ্যুত মণ্ডল, এবং তারকেশ্বরের নছিপুরের সুজন কুন্ডু জানিয়েছেন যে, সাম্প্রতিক দুর্যোগের পর যে ধান ফসল হিসেবে টিকে রয়েছে, তা সংগ্রহ করে শুকাতে এখনও অন্তত ১৫-২০ দিন সময় লাগবে।
এ পরিস্থিতিতে ফসলের গুণমানের অজুহাতে যদি মূল্য কাটা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়, তবে তাঁরা সরকারি হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকার কী পদক্ষেপ নেয়, তার ওপর নির্ভর করছে চাষিদের আয়ের নিশ্চিতকরণ।
Paddy Procurement Wb Farmer Registration Online Apply: Click Here
আরও পড়ুন: সব কৃষকরা ফসলের ক্ষতিপূরনের টাকা পাবে? কবে টাকা ঢুকবে দেখুন | Bangla Shasya Bima
আরও পড়ুন: ফসলের ক্ষতিপূরণের টাকা আপনি পাবেন কিনা চেক করুন | Bangla Shasya Bima Status Check
টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
হোয়াটস্যাপ চ্যানেল | জয়েন করুন |