Bangla Awas Yojana: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার জন্য কেন্দ্র সরকারের কাছ থেকে বাংলার প্রাপ্য ৮২০০ কোটি টাকা প্রায় দু বছর ধরে আটকে রয়েছ।
এর আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে কেন্দ্র সরকার যদি আবাস যোজনার টাকা না দেয় তবে সেই টাকা রাজ্য সরকারই নিজেদের কোষাগার থেকে দেবে। এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার।
বুধবার নবান্নের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলার আবাস যোজনা (Banglar Awas Yojana)।
তবে ভেবেচিন্তে নামের বদলও আনতে পারে মমতার সরকার। নবান্নের বৈঠকে স্থির হয়েছে যে এই রাজ্যের প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ পরিবারকে পাকা বাড়ি বানিয়ে দিতে হবে।
সেই পাকা বাড়ি বানাতে প্রতিটি পরিবার পিছু ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এই টাকাটা রাজ্যবাসীরা পাবে তিনটি কিস্তির মাধ্যমে।
প্রথম কিস্তির পরিমাণ হল ৬০ হাজার টাকা। প্রথম কিস্তিটি দেওয়া হবে ডিসেম্বর মাসের ২০ তারিখের মধ্যে। পরের কিস্তিতে পাওয়া যাবে ৪০ হাজার টাকা। আর শেষ কিস্তিতে ২০ হাজার টাকা দেবে রাজ্য সরকার।
মমতা ব্যানার্জি লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প চালু করে এতটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন যে বিরোধীরা তাকে হারাতে একদম বেসামাল হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে আরজিকর ধর্ষণকাণ্ডের ঘটনা, মুখ্যমন্ত্রীর জনপ্রিয়তা কমালেও এখন আবাসন যোজনা নিয়ে তিনি যে সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছে তাতে তাঁর জনপ্রিয়তা আরও বাড়তে পারে।
আবাসন যোজনার শেষ কিস্তির টাকাটি সরকার এমন সময় দিতে চলেছে যে তার ৭-৮ মাসের পরই আরম্ভ হবে ২৪ এর বিধানসভা ভোট। এমনিভাবেই তিনি লোকসভা ভোটের আগেই রাজ্যের ২ কোটি মহিলাদের লক্ষ্মীর ভান্ডারের বর্ধিত টাকা পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
এই আবাস যোজনার মাধ্যমে ১১ লক্ষ উপভোক্তার অর্থ অন্তত ৪৪ লক্ষ (পরিবার পিছু চার জন ধরে) মানুষ সুবিধা পাবে। বিশেষজ্ঞ মহলের মতে গ্রামীণ মানুষদের কাছে নিজের ভীত শক্ত করার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী এই আবাস যোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর আবাস যোজনার মাধ্যমে বাড়ি তৈরি করলে সেই বাড়ির বাইরে প্রধানমন্ত্রীর একটি ছবি ফলক হিসেবে টাঙ্গাতে হতো। এখন হয়তো সেই ফলকে এবার মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকবে।
নবান্ন থেকে খবর পাওয়া গেছে যে এই বাংলার আবাস যোজনার প্রার্থী বাছাই এর ক্ষেত্রে খুব সর্তকতা অবলম্বন করবে রাজ্য সরকার। কোনো দুর্নীতির ঘটনা সামনে এলেই যে কোনো মানুষ আদালতে গিয়ে মামলা করলে এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা খুবই কঠিন হয়ে পড়বে।
এবার প্রশ্ন উঠতে পারে যে রাজ্য সরকারের কোষাগারের অবস্থা আমাদের সকলেরই জানা। কোষাগারের এই অবস্থায় রাজ্যের ১১ লক্ষ পরিবারকে ১ লক্ষ ২০ হাজার কোটি টাকা করে দিতে গেলে প্রায় চোদ্দ হাজার কোটি টাকা লাগবে।
আর সেই টাকা কিভাবে দেবে রাজ্য সরকার? এর উত্তরে বলা হয়েছে যে মোট টাকার মধ্যে চলতি আর্থিক বছরের বাজেট থেকে অর্ধেক টাকা এবং বাকি টাকা বরাদ্দ করা হবে আগামী আর্থিক বছরের বাজেট থেকে।
আরও পড়ুন:- ই শ্রম কার্ড থাকলে ৩০০০ টাকা মাসে পেনশন দিচ্ছে মোদী| E Shram Card 3000 Pension
কবে সমীক্ষা শুরু হবে :-
ডিসেম্বরে প্রথম কিস্তির টাকা দেওয়ার আগে কারা বাড়ির টাকা পাবে তা যাচাই করার জন্য বাড়িতে বাড়িতে সমীক্ষা করতে আসবে ।
গাইড লাইনে বলা হয়েছে ২১ শে অক্টোবর থেকে ৩০ শে অক্টোবর এর মধ্যে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করা হবে এবং যারা বাড়ির টাকা পাওয়ার জন্য যোগ্য তাদের নাম লিস্টে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ।
১৪ ই নভেম্বরের মধ্যে ক্রস চেকিং করা শেষ করা হবে। ২১ থেকে ২৭ নভেম্বরের মধ্যে বিডিও, এসডিও এবং জেলা শাসকের অফিসের সামনে এবং ওয়েবসাইটে যারা বাড়ি পাবে তাদের তালিকা দেওয়া থাকবে ।
যদি কারো কোন অভিযোগ থাকে তখন তা জানাতে পারবেন । তারপর ১৩ই ডিসেম্বর এর মধ্যে জেলা স্তরের কমিটি ফাইনাল নামের লিস্ট অনুমোদন দেবে (Bangla Awas Yojana New List)।
যাদের নাম ফাইনাল লিস্টে থাকবে তাদেরকে ২০ ডিসেম্বর এর মধ্যে প্রথম কিস্তির ৬০০০০ টাকা ব্যাংক একাউন্টে পাঠানো হবে।
টাকা পাওয়ার শর্ত (Bangla Awas Yojana):-
বাংলার বাড়ি প্রকল্পে টাকা পাওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল-
১) বাড়িতে তিন বা চার চাকার গাড়ি ,তিন বা চার চাকার কৃষি যন্ত্রপাতি থাকা চলবে না ।
২) মাসিক ১৫০০০ টাকার বেশি আয় করে এরকম পরিবার বাড়ির টাকা পাবে না
৩) যে সকল পরিবারের কোনো সদস্য আয়কর দেন ( Income Tax) সেই পরিবার বাড়ির টাকা পাবে না ।
৪) যাদের আড়াই একর বা তার বেশি সেচযুক্ত কৃষি জমি রয়েছে তারা বাড়ির টাকা পাবে না।
৫) যাদের ৫ একর এর বেশি অসেচযুক্ত কৃষি জমি রয়েছে তারাও বাড়ির টাকা পাবে না।
৬) বাড়িতে আগে থেকেই পাকা বাড়ি বা অন্য কোন সরকারি ঘর থাকলে পাবে না
৭) পরিবারের কেউ সরকারি ঘর পেলে সেই পরিবারের নতুন সদস্য বাড়ি পাবে না ।
৮) উপভোক্তা যদি অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়ে যায় তাহলেও পাবে না
৯) উপভোক্তা যদি নমিনি ছাড়া মারা যায় তাহলেও পাবে না
১০) বাড়িতে মাছ ধরার বোট থাকলেও পাবে না
১১) কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের লোন নেওয়ার পরিমাণ ৫০০০০ টাকার উপরে থাকলে পাবে না।
১২) পরিবারে কেউ সরকারি চাকরি করলে পাবে না ।
১৩) নিজের নামে ফ্রিজ অথবা ল্যান্ড ফোন থাকলে পাবে না ।
১৪) কেউ যদি প্রফেশনাল ট্যাক্স দেয় তাহলেও পাবে না
আরও পড়ুন:- টয়লেট বানাতে ১২০০০ টাকা দিচ্ছে মোদি, অনলাইনে আবেদন করুন |Toilet Online Apply Gramin
আরও পড়ুন:- মাসে ৩০০০ টাকা কৃষকদের দিবে, অনলাইনে আবেদন করুন| Pm Kisan Mandhan Yojana
টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
হোয়াটস্যাপ চ্যানেল | জয়েন করুন |